যতক্ষণ শেখ হাসিনার হাতে দেশ ততক্ষণ পথ হারাবে না বাংলাদেশ: ড. শ্রী বীরেন শিকদার
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২১, ৯:৫৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের অনেক দেশ যেখানে উন্নতির এমন অসাধ্য সাধন করতে পারেনি, যেমন পেরেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ। একটি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে, নিম্ন মধ্যম আয়ের পথ পেরিয়ে উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলার নেতৃত্ব দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তাঁর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে সক্ষম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে সুদূর প্রসারী ‘ভিশন’ নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন। তাঁর মূল ‘ভিশন’ ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ২১৯তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকদার, সুইডেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকায় মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক ভিপি ড. ফরহাদ আলী খান। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ড. শ্রী বীরেন শিকদার বলেন, আজকের এই দিনে আমি আমার বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধা জানাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যে মহামানবের অবদানে আজ আমরা লাল সবুজের পতাকা নিয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করা দাড়িয়ে আছি, গভীর শ্রদ্ধা সাথে স্মরণ করছি ১৫ই আগস্টের সেই কালো রাতে তার পরিবারের যেসব সদস্যরা শাহাদাৎ বরণ করেছিলেন। গভীর শ্রদ্ধা সাথে স্মরণ করছি ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ ইজ্জত হারা মা বোনদের। গভীরভাবে স্মরণ করি জাতীয় ৪ নেতাকে। আজকের সংলাপে যে বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী বিষয়। আমরা আমাদের জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ৩ টার্ম ধরে আমরা ক্ষমতায় রয়েছি এবং এর পূর্বে ১৯৯৬ সালেও আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক টার্ম ক্ষমতায় ছিলাম। এতো বছর ক্ষমতায় থাকাকালে আজকে বাংলাদেশ পৃথিবীর কাছে একটি উজ্জ্বল একটি নামে পরিণীত হয়েছে। বাংলাদেশ কিন্তু এখন সেই অবহেলার নাম নয়। বাংলাদেশকে আগে যে অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা হতো সেই অবহেলার দৃষ্টিতে আর নেই। আমরা পথ নির্ধারণ করেই আমাদের যাত্রা শুরু করেছিলাম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর এর নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, যারা এই দেশের জন্য আত্তহুতি দিয়েছিল তাদের সবার স্বপ্ন ছিল একটি কাঙ্ক্ষিত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়েই তারা এই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আর সেই কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের বাংলাদেশকে বাস্তবে রুপান্তর করেছেন আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমান প্রজন্মের কাছে শেখ হাসিনা এক সাহসী রাজনীতিকের নাম; যার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় ভবিষ্যতের বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে চলেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি পাল্টে গেছে। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হয়েছে। ভিকটিমের দ্রুত বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হচ্ছে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার রায় ঘোষিত হয়েছে, এর আগে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জেল হত্যাকাণ্ড ও বিডিআর সদস্য কর্তৃক সেনাসদস্যদের হত্যার বিচারসহ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন হওয়া তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে অনন্য মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছেন; সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন ও বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়েছেন; তাঁর সেই আদর্শিক ধারায় স্নাত হয়ে শেখ হাসিনা মেধা ও দূরদর্শিতাসম্পন্ন রাজনীতিক হিসেবে জনগণের ভাগ্য বদলে দিয়েছেন। জননেত্রীর নেতৃত্বে এ মুহূর্তে বাংলাদেশের অগ্রগতি অসামান্য। শেখ হাসিনা তাঁর নিজের কাজে প্রমাণ করেছেন যে, রাজনীতির অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ ও জনগণের ভাগ্য-উন্নয়ন। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অর্জনের ফল, স্বপ্নজয়ের আকাঙ্ক্ষা আর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি। প্রায় শতকরা ৮৮ ভাগ দরিদ্র জনগোষ্ঠী নিয়ে শুরু করা বাংলাদেশে এখন দারিদ্র্যের হার অনেক কমে গেছে। তাই এদেশ স্বপ্ন দেখছে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে নাম লেখাতে যে চেষ্টা আর উদ্যম ছোট্ট এই ভূখণ্ডে, তাকে বড় কোনো স্বপ্ন নয় বলেই মনে করছেন বিশ্ব অর্থনীতির বিশ্লেষকরা। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ডেল্টা প্ল্যান এদেশের অগ্রগতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। তাই আমরা এভাবে বলতে পারি, যতক্ষণ শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ ততক্ষণ পথ হারাবে না বাংলাদেশ।