বৃহস্পতিবার র্যাব সদরদপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে আসমাসহ ৯ জঙ্গি ফিরেছেন স্বাভাবিক জীবনে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা আসমা বলেন, ২০১৯ সালে এসএসসি পাস করি। তারপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজনের সঙ্গে জড়িয়ে বিয়ে করি এবং জঙ্গিবাদের জড়িয়ে যাই।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে একে একে আত্মসমর্পণ করেন আবিদা জান্নাত আসমা (১৮), মোহাম্মদ হোসেন ওরফে হাসান গাজী (২৩), মো. সাইফুল্লাহ (৩৭), সাইফুল ইসলাম (৩১), মো. আবদুল্লাহ আল মামুন (২৬), মো. সাইদুর রহমান (২২) ও আবদুর রহমান সোহেল (২৮)।
জঙ্গিবাদে জড়ানো এবং এ থেকে ফিরে আসার গল্প জানাতে গিয়ে আবিদা জান্নাত আসমা বলেন, ২০১৮ সালে পরিবারকে না জানিয়ে তাকে বিয়ে করি। এসএসসি পাসের পর পরিবারের কাউকে না জানিয়ে পড়াশোনার জন্য বিদেশে যাই। সেও আমার সাথে যায়। এটা তার পরিকল্পনা ছিল।'
'ছয় মাস পর আবার দেশে ফিরে আসি। এরপর দেশের বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে থাকি। মূলত এই সময়ে জানতে পারি আমার স্বামী জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। সেও আমাকে তার কাজে সহযোগিতা করতে বলে। তার মাধ্যমে কনভিন্স হয়ে আমিও জঙ্গিবাদে জড়িত হই। কিন্তু আমি যে ভুলপথে পা বাড়িয়েছি তা ধীরে ধীরে বুঝতে পারি। একটি স্বাভাবিক জীবনে বাবা মায়ের আদর স্নেহ ভালোবাসা সবকিছু ছেড়ে বস্তি ও বন্দীর জীবন-যাপন করতে হয়।'
আবিদা জান্নাত আসমা বলেন, ‘যে মানুষটি ভালোবেসে স্বপ্ন দেখিয়ে আমাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় সেও কষ্টের জীবন যাপন করছিল। সমাজ ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কষ্টের জীবন বেছে নিতে হয়। পরে এ থেকে পরিত্রাণের সিদ্ধান্ত নিই। এক পর্যায়ে আমি পালিয়ে এসে একাই র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করি। তাই র্যাবকে ধন্যবাদ। আমার স্বামীকেও আত্মসমর্পণ করার জন্য আহ্বান করছি।
সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আবিদা জান্নাত আসমা বলেন, ‘আমাদের কাউকে যেন ফাঁদে পড়তে না হয়। নিজের যেন একটা জাজমেন্ট থাকে। আমরা নিজেরা যেন জাজ করতে পারি। অন্যদের কথা যেন আমরা অন্ধভাবে বিশ্বাস না করি।’
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে বলেন, জঙ্গি সেজেই তাদের সঙ্গে মিশে পরে নজরদারিতে এনে তাদের পথটি যে ভুল, তা তাদের বোঝানো হয়েছে। তাদের আলোর পথে ফিরিয়ে আনার এটা প্রথম ধাপ।
এই নয়জনের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে পুরনো একটি মামলা রয়েছে, বাকিদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বলে জানিয়েছেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক।
যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের মধ্যে মামুনকে ফার্মেসি, সাইফুল্লাহ ও সোহেলকে গাভী, সাইদুর, হাসান ও সাইফুলকে ট্রাক্টর দিয়ে পুনর্বাসন করা হচ্ছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।