শিরোনাম: |
আ.লীগের মহাপরিকল্পনায় ‘সুবর্ণ শুদ্ধি অভিযান’
উৎপল দাস
|
![]() আ.লীগের মহাপরিকল্পনায় ‘সুবর্ণ শুদ্ধি অভিযান’ ভোরের পাতার এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে গণভবনের বিশ্বত সূত্র এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের ৫ জন নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইমেজ সংকট যেন ভবিষ্যতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই অনুপ্রবেশ ঠেকানো এবং আদর্শিক আওয়ামী লীগ উপহার দিতে চান বঙ্গবন্ধু কন্যা, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ইতিমধ্যেই দলীয় সর্বোচ্চ ফোরামে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। নতুন বছরে দলের পরিকল্পনা কি কি হতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে শেখ হাসিনার বিশ্বত দুইজন প্রেসিডিয়াম সদস্যকে দায়িত্বও দিয়েছেন পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করার জন্য। সুবর্ণ শুদ্ধি অভিযানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য ভোরের পাতাকে বলেছেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী যারা আছেন তারা কেউ আর সুযোগ নিতে পারবে না। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে কারা কারা রাষ্ট্র বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের পক্ষে গোপনে কাজ করছেন, তাদের তালিকা করা হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যেই আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত যারা বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল নয়, তাদের তালিকা করা হবে। অনুপ্রবেশকারীদের আওয়ামী লীগ করার সুযোগ দেয়া হবে না। বারবার তাদের কারণেই আওয়ামী লীগের সমালোচনা হয়। উদাহরণ হিসাবে ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দেয়া বাটপার সাহেদের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, একজন সাহেদের কারণে আওয়ামী লীগের মতো ঐতিহ্যবাহী দলকে নিয়ে কেউ কথা বলবে, এটা কখনোই কাম্য হতে পারে না। দলের নাম ভাঙিয়ে কে কি অনৈতিক সুবিধা নিয়েছে, তাদেরও খুঁজে বের করা হবে। এবারের উপ কমিটিতে কোনো সাহেদের মতো কেউ এখনো ঠাঁই পায়নি বলেই আমরা জানি। যদি কেউ থেকে থাকে, তাকেও বহিষ্কার করা হবে। এদিকে, আওয়ামী লীগের একজন সম্পাদক পদমর্যাদার নেতা ভোরের পাতাকে বলেন, বাংলাদেশে এখন যেদিকে তাকাই শুধু আওয়ামী লীগ আর আওয়ামী লীগই দেখি। প্রতিদিনই কমপক্ষে এক হাজারের মতো লোককে বিদায় করতে হয় কথা বলে। সবাই এখন পদের জন্য আসে। কেউ এসে বলে না, আমি নেত্রীর কর্মী হয়ে রাজনীতি করতে এসেছি। গণভবনের সূত্রটি ভোরের পাতাকে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসাবে দলের আদর্শিক কর্মী কারা, কারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী সবাইকে চিনেন। একজন ওয়ার্ডের কর্মীকে তিনি নাম ধরে বলতে পারেন। আবার কোনো প্রেসিডিয়াম সদস্য যদি কোনো বিতর্কিত ব্যক্তিকে নেতা বানানোর জন্য অনুরোধ নিয়ে আসেন, তখন তাকে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে পুরোপুরি বলে দিতে পারেন। শেখ হাসিনার কাছে সবারই বায়োডাটা আছে। এই কারণেই তিনি ভুল করেন না। দলের এক সভায় দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য তার নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির এক লোককে স্থানীয় নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়ার অনুরোধ করেছিলেন। তখন শেখ হাসিনার ধমকও সেই প্রেসিডিয়ামকে খেতে হয়েছিল। তিনি ক্যাসিনো কাণ্ডে জড়িতদের যেভাবে শায়েস্তা করেছেন, ঠিক তেমনিভাবে এবার অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতেই এই অভিযান পরিচালনার কথা ভেবেছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই এদেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর এক ডাকে আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। এই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের মূল ভিত্তিগুলোর ওপর বরাবরই আঘাত করেছে পরাজিত শক্তিরা। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত করে বাঙালির হৃদয়ে আঘাত করেছে। তাই আওয়ামী লীগ যদি এখনই এই শুদ্ধি অভিযান না চালায় তাহলে ভবিষ্যতে দলের মধ্যে গাপটি মেরে থাকা অনুপ্রবেশকারীরা গোপনে বা সুযোগ আসলে প্রকাশ্যে আঘাত করবে। তাই অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী এবং মুজিব আদর্শের লোকজন ছাড়া কেউ যেন আওয়ামী লীগে ঠাঁই না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখার অনুরোধ করেছেন তারা। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |